সভ্যতা ক্রমান্বয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। যা সব হচ্ছে মানুষের নতুন কিছু বের করার আগ্রহ ও গবেষণার পরিপ্রেক্ষিতে। তোমরা নিশ্চয়ই অনুমান করতে পেরেছ তথ্যপ্রযুক্তির কারণে এই পবেষণার জগতে শুধু যে একটা বিশাল উন্নতি হয়েছে তা নয়- বলা যেতে পারে এখানে সম্পূর্ণ নতুন একটা মাত্রা যোগ হয়েছে। মানুষ এখন সাহিত্য, শিল্প বা সমাজবিজ্ঞান অথবা গণিত, প্রযুক্তি আর বিজ্ঞান, যা নিয়েই গবেষণা করুক না কেন ভারা কম্পিউটার এবং তথ্যপ্রযুক্তির সাহায্য ছাড়া সেই গবেষণার কথা চিন্তাও করতে পারে না।
গবেষণা করতে হলেই নানা ধরনের তথ্য নিয়ে কাজ করতে হয়। তথ্য সংগ্রহ করতে হয়, প্রক্রিয়া করতে হয়, বিশ্লেষণ করতে হয় এবং গবেষণা শেষে তথ্যকে সুন্দর করে প্রদর্শন করতে হয়। আগে সব সময় এই কাজগুলো মানুষকে দৈহিক পরিশ্রম করে করতে হতো, কম্পিউটার চলে আসার পর এগুলো আর নিজের হাতে করতে হয় না। মানুষ কম্পিউটার ব্যবহার করে করতে পারে। এর ফলে এখন গবেষকদের আর তথ্যপ্রক্রিয়া নিয়ে দুশ্চিন্তা করতে হয় না, তারা সত্যিকারের গবেষণায় মন দিতে পারেন। তোমরা জেনে খুশি হবে শিল্প- সাহিত্য, সমাজবিজ্ঞান, অর্থনীতি এরকম সব বিষয়েই এদেশের গবেষকরা অনেক চমৎকার গবেষণা করে থাকেন এবং তারা সবাই তাদের গবেষণায় কম্পিউটার ব্যবহার করেন।
বিজ্ঞান আর প্রযুক্তি বিষয়ের গবেষণাতেও কম্পিউটার এবং তথ্যপ্রযুক্তি অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এই গবেষণাগুলোকে প্রধান দুই ভাগে ভাগ করা যায়, সেগুলো হচ্ছে তাত্ত্বিক এবং ব্যবহারিক। তাত্ত্বিক গবেষণাতে গবেষকরা একটা বিষয়ের তাত্ত্বিক অংশটুকু নিয়ে চিন্তা ভাবনা করেন- এবং সেজন্যে তাদেরকে কম্পিউটারের উপর নির্ভর করতে হয়। গবেষণার কাজটুকু ঠিকভাবে অগ্রসর হচ্ছে কি না সেটা দেখার জন্যে তাদেরকে তথ্যের সাথে মিলিয়ে দেখতে হয় এবং এ জন্যে বিশাল ডেটাবেস বা তথ্য ভান্ডারের সাথে যোগাযোগ রাখতে হয়, তথ্য প্রযুক্তিকে ব্যবহার করতে হয়।
ল্যাবরেটরিতে ব্যবহারিক গবেষণা করতে হয়, নানা রকম যন্ত্র ব্যবহার করে সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। ল্যাবরেটরির নতুন নতুন যন্ত্রপাতি তৈরি করা বা পরিচালনা করা কিংবা ব্যবহার করার জন্য বিজ্ঞানীরা সব সময় কম্পিউটারকে ব্যবহার করেন। মোটামুটি অবধারিতভাবে বলে দেওয়া যায়, একটি যন্ত্র থেকে তথ্য নিয়ে সেটা প্রক্রিয়া করার জন্য সবসময়ই কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়।
কম্পিউটার বলতেই আমাদের চোখের সামনে যে ছবিটি ভেসে উঠে, আজকাল তার চাইতে অনেক ছোট কম্পিউটার তৈরি হয়েছে কম্পিউটারের মতো কাজ করতে পারে সেরকম ছোট ছোট মাইক্রো কন্ট্রোলার, FPGA (Field Programmable Gate Array), PLA ( Programmable Logic Array) ইত্যাদি তৈরি হয়েছে। যন্ত্রের ভিতর সেগুলো বসিয়ে দিয়ে যন্ত্রগুলোকে অনেক স্বয়ংক্রিয় করে গবেষণার পুরো কাজটি অনেক সহজ করে দেওয়া হয়। ব্যবহারিক গবেষণাতে নেটওয়ার্ক ব্যবহার করা যায় বলে বিজ্ঞানের অনেক গবেষণাতে আজকাল বিজ্ঞানীদের আর ল্যাবরেটরিতে বসে থাকতে হয় না, তারা অনেক দূর থেকে পরীক্ষাটি নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। এ পদ্ধতিটি Virtual Laboratory এর আওতায় পড়ে সেখানে সত্যিকার ল্যাবরেটরির ন্যায় পরীক্ষা নিরীক্ষা করা সম্ভব। www.softpedia.com এ ধরনের Virtual Laboratory এর উদাহরণ। পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্য যে শুধু প্রচলিত কম্পিউটার ব্যবহার করা হয় তা নয়- অনেক সময় বিজ্ঞানীরা আরো শক্তিশালী বিশেষায়িত কম্পিউটার ব্যবহার করে থাকেন।
দলগত কাজ : তোমার নখের সমান দশটি কম্পিউটার তোমাকে দেওয়া হলে তুমি সেগুলো কী কাজে লাগাবে? লেখ।
নতুন শিখলাম : মাইক্রোকন্ট্রোলার, FPGA, PLA
আরও দেখুন...